জাতীয় পার্টির মহাসচিব কাজী মামুনূর রশিদ বলেছেন, কারবালা ষড়যন্ত্রের মতোই গেলো নির্বাচনে রক্তপাতহীন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জিএম কাদের নামধারি ইয়াজিদ পল্লীবন্ধুর পরিবারকে রাজনৈতিকভাবে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছেন। তাই কাদের-চুন্নুর মতো ইয়াজিদ-মীর জাফরদের আজীবনের জন্য বয়কট করতে হবে। তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত কাদের-চুন্নুকে উৎখাত করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পল্লীবন্ধুর সৈনিকরা ঘরে ফিরবে না।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টায় সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সিলেট জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি আয়োজিত বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় জাপা মহাসচিব বর্ষীয়ান রাজনীতিক কাজী ফিরোজ রশিদের অব্যাহতি প্রসঙ্গ টেনে বলেন, জিএম কাদেরের সামনে যদি একটি ন্যায় সঙ্গত দাবিও উথাপন করা হয়, তাতেও তিনি বহিস্কারের আদেশ দেন। মনে রাখতে হবে ফিরোজ রশিদ একদিনে সৃষ্টি হয়নি। তিনি তার অফিসে বসে নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় নির্বাচন নিয়ে কাদের-চুন্নুর আচরণের প্রতিবাদ করায়, তাকে বহিস্কার করা হয়।

কাজী মামুন বলেন, ২৬ টি আসনে আওয়ামী লীগ সভাপতি নৌকার প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেন। তাহলে জিএম কাদের-চুন্নু আসন সমঝোতার কথা অস্বীকার করলেন কেনো? এটা কি প্রতারণা নয়? তারা জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। দেশের ১৮ কোটি মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। সুতরাং আমাদের উচিত হবে প্রতারক কাদের-চুন্নকে আজীবনের জন্য বয়কট করা।

তিনি আরো বলেন, যারা জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের হৃদয়ের কথা বোঝে না, যারা জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের বেদনা অনুভূব করতে পারে না, তারা জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতা হওয়ার যোগ্যতা রাখে না।

জাপা মহাসচিব বলেন, জিএম কাদেরকে রাজনৈতিকভাবে বিতাড়িত করতে হবে। জিএম কাদের একটি কলংকিত নাম। মীরজাফর, সিরাজদৌলার সঙ্গে যে আচরণ করেছিল, যে ষড়যন্ত্র করেছিল, ঠিক তেমনিভাবে গেলো নির্বাচনে জিএম কাদের পল্লীবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। এদের কারণে এখন সমাজে মুখ দেখানো যায় না। জাতীয় পার্টির নাম পরিচয় দেয়া যায় না। সুতরাং কাদের-চুন্নুকে বয়কট করতে হবে।

এসময় জাপা মহাসচিব কাজী মামুন আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য বর্ধিত সভা ও ৯ মার্চের কাউন্সিল সফল করতে সিলেট বিভাগের জাতীয় পার্টির এরশাদ প্রেমিক নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকা আহ্বান জানান।

জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও  সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়ার সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভায় প্রধান বক্তা হিসবে বক্তব্য রাখেন পল্লীবন্ধুপুত্র রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী গোলাম সারওয়ার মিলন, ঢাকা মহানগর উত্তর জাপার আহবায়ক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সাবেক এমপি এমএ গোফরান, বিশিষ্ট রাজনৈতিক গবেষক-বিশ্লেষক ও সাবেক ছাত্র নেতা খন্দকার মনিরুজ্জামান টিটু, পার্টির উপদেষ্টা এম এ কুদ্দুস খান, ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর উত্তর জাপার সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, উপদেষ্টা আমানত হোসেন, দলের যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, কেন্দ্রীয় জাপা নেতা পীরজাদা জুবায়ের আহমেদ, জহির উদ্দিন জহির,সিলেট জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান চৌধুরী, জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আবু সাঈদ লিয়ন, ছাত্র নেতা এরফান উদ্দিন, মিরাজুল ইসলাম রাজ, সাহেদ কাদরী ও মাসুদ হাসান প্রমূখ।

সিলেট জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কবির আহমদ, জাপা নেতা সৈয়দ আহমদ আলী ও মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবু সালেহ চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্বনাথ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি জয়নাল আহমদ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক একে এম দুলাল, গোয়াইনঘাট উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফারুক সরকার, সিলেট জেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি বিশ্নু রবি দাস, মহানগর শাখার সভাপতি মোজ্জামেল হোসেন বাদশা, কেন্দ্রীয় নেতা পিন্টু চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলার আহ্বায়ক এনামুল হক তালুকদার , হবিগঞ্জ জেলার যুগ্ন আহ্বায়ক এম এ কাইয়ুম সদস্য সচিব মুরাদ আহমেদ ও সুনামগঞ্জ জেলার সহ সভাপতি আতিকুর রহমান ও স্হানীয় জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ।

এর আগে বেলা ১২ টায় বিমানযোগে সিলেট পৌঁছে পল্লীবন্ধুপুত্র সাদ এরশাদকে সঙ্গে নিয়ে হযরত শাহজালালের মাজার জিয়ারতের মধ্যদিয়ে ৯ মার্চের আসন্ন জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেন জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।